1.শচীন তেন্ডুলকর 

শচীন তেন্ডুলকর, যিনি  ভারতের অন্যতম সেরা এবং বিশ্বজুড়ে অন্যতম প্রভাবশালী ক্রিকেটার। ১৯৭৩ সালের ২৪শে এপ্রিল মুম্বাইতে জন্মগ্রহণ করা শচীন তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন মাত্র ১৬ বছর বয়সে, যখন তিনি ১৯৮৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলেন। শচীনের ক্রিকেট ক্যারিয়ার অত্যন্ত গৌরবময় এবং অসাধারণ অর্জনে ভরপুর। তিনি টেস্ট এবং একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) উভয় ফরম্যাটে সর্বাধিক রান সংগ্রাহক। তাঁর নামের পাশে রয়েছে ১০০টি আন্তর্জাতিক শতক, যা একটি অনন্য রেকর্ড। শচীন ২০০ টেস্ট ম্যাচ এবং ৪৬৩ ওডিআই ম্যাচে অংশ নিয়েছেন, যেখানে তিনি যথাক্রমে ১৫,৯২১ এবং ১৮,৪২৬ রান সংগ্রহ করেছেন। শচীন তেন্ডুলকর একাধিক বড় টুর্নামেন্টে ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ২০১১ সালে, তিনি বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণ করেন, যেখানে ভারত চ্যাম্পিয়ন হয়। তাঁর ব্যাটিং দক্ষতা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং খেলার প্রতি নিষ্ঠা তাঁকে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন করেছে।

পাকিস্তান ক্রিকেট খেলোয়াড়দের নাম

2. সুনীল গাভাস্কার 

সুনীল গাভাস্কার, যিনি "লিটল মাস্টার" নামে পরিচিত, হলেন ভারতের অন্যতম কিংবদন্তি ক্রিকেটার এবং টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ওপেনিং ব্যাটসম্যান। ১৯৪৯ সালের ১০ জুলাই মুম্বাইতে জন্মগ্রহণ করা গাভাস্কার তাঁর অসাধারণ টেকনিক এবং দৃঢ় মানসিকতার জন্য সুপরিচিত। সুনীল গাভাস্কার তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন ১৯৭১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেই সফরে তিনি অভিষেক টেস্ট সিরিজেই ৭৭৪ রান করেন, যা আজও একটি রেকর্ড। তিনি প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ১০,০০০ রান অতিক্রম করেন এবং তাঁর ক্যারিয়ারে ৩৪টি টেস্ট শতক করেন, যা দীর্ঘদিন ধরে একটি রেকর্ড ছিল। গাভাস্কার তাঁর সময়ের অন্যতম কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী বোলারদের বিরুদ্ধে সফলভাবে খেলেছেন, বিশেষ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্ধর্ষ পেস বোলারদের বিরুদ্ধে। তাঁর অনন্য ব্যাটিং শৈলী এবং দৃঢ় প্রতিরোধ ক্ষমতা তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেটের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ করে তুলেছে।

• পদ্মভূষণ (১৯৭৫)

• আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেম (২০০৯)

ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর গাভাস্কার একজন জনপ্রিয় ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার এবং বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করছেন। তাঁর অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান ক্রিকেটবিশ্বে সর্বদা প্রশংসিত। সুনীল গাভাস্কার শুধুমাত্র একজন মহান ক্রিকেটার নন, তিনি একজন পথপ্রদর্শক এবং অনুপ্রেরণা, যাঁর অবদান ভারতীয় ক্রিকেটে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ভারতের সেরা ১০ জন ক্রিকেটারদের তালিকার মধ্যে ‘’সুনীল গাভাস্কার’’ রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। 

3. কপিল দেব

কপিল দেব, যিনি "হরিয়ানার হারিকেন" নামে পরিচিত, হলেন ভারতের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার এবং প্রথম বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। ১৯৫৯ সালের ৬ জানুয়ারি চণ্ডীগড়ে জন্মগ্রহণ করা কপিল দেব তাঁর শক্তিশালী বোলিং, আক্রমণাত্মক ব্যাটিং এবং নির্ভীক নেতৃত্বের জন্য বিখ্যাত। কপিল দেব তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন ১৯৭৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে। তাঁর সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্ত আসে ১৯৮৩ সালে, যখন তিনি ভারতের অধিনায়ক হিসেবে দলকে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের দিকে নেতৃত্ব দেন। সেই টুর্নামেন্টে তাঁর অসাধারণ অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ভারতকে বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন করে তোলে।

কপিল দেবের ক্যারিয়ারের কিছু উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান:

• টেস্ট ক্রিকেটে ১৩১ ম্যাচে ৫,২৪৮ রান এবং ৪৩৪ উইকেট

• ওডিআই ক্রিকেটে ২২৫ ম্যাচে ৩,৭৮৩ রান এবং ২৫৩ উইকেট

তাঁর উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের মধ্যে রয়েছে:

• ১৯৮৩ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৭৫ রানের একটি মহাকাব্যিক ইনিংস, যা ভারতের সেই টুর্নামেন্ট জয়ে বড় ভূমিকা রাখে।

• টেস্ট ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে সর্বাধিক উইকেট শিকারী হিসেবে রেকর্ড ধরে রাখা।

কপিল দেব বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

• অর্জুন পুরস্কার (১৯৮০)

• পদ্মশ্রী (১৯৮২)

• পদ্মভূষণ (১৯৯১)

• উইজডেন ক্রিকেটার অব দ্য ইয়ার (১৯৮৩)

• আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেম (২০১০)

ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর কপিল দেব কোচিং এবং ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করেছেন এবং তিনি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছেন। তাঁর নেতৃত্ব, পারফরম্যান্স এবং খেলার প্রতিনিষ্ঠা তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আইকন করে তুলেছে। ভারতের সেরা ১০ জন ক্রিকেটারদের তালিকার মধ্যে ‘’কপিল দেব’’ রয়েছেন তৃতীয় স্থানে।  

4. মহেন্দ্র সিং ধোনি

মহেন্দ্র সিং ধোনি, যিনি "এমএস ধোনি" এবং "ক্যাপ্টেন কুল" নামে পরিচিত, মহেন্দ্র সিং ধোনি  হলেন ভারতের অন্যতম সফল এবং প্রভাবশালী ক্রিকেটার ও অধিনায়ক। ১৯৮১ সালের ৭ জুলাই ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে জন্মগ্রহণ করা ধোনি তাঁর অনন্য উইকেটকিপিং, আক্রমণাত্মক ব্যাটিং এবং নির্ভীক নেতৃত্বের জন্য সুপরিচিত। ধোনি ২০০৪ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ম্যাচে অভিষেক করেন এবং দ্রুতই তাঁর ব্যাটিং দক্ষতা ও ফিনিশিং ক্ষমতার জন্য পরিচিত হয়ে ওঠেন। তাঁর নেতৃত্বে, ভারত অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি ভারতের একমাত্র অধিনায়ক, যিনি তিনটি বড় আইসিসি ট্রফি জিতেছেন: ২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপ, 

২০১১ বিশ্বকাপ এবং 

২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।

ধোনির ক্যারিয়ারের কিছু উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান:

• ৯০টি টেস্ট ম্যাচে ৪,৮৭৬ রান

• ৩৫০টি ওডিআই ম্যাচে ১০,৭৭৩ রান

• ৯৮টি টি-২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ১,৬১৭ রান

তাঁর উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের মধ্যে রয়েছে:

• ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে অপরাজিত ৯১ রানের ইনিংস, যা ভারতকে শিরোপা জেতাতে সহায়ক হয়।

• আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক হিসেবে বেশ কয়েকটি শিরোপা জয়।

ধোনি বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

• রাজীব গান্ধী খেল রত্ন (২০০৭)

• পদ্মশ্রী (২০০৯)

• পদ্মভূষণ (২০১৮)

ধোনির নেতৃত্বে ভারতীয় দল নির্ভীক ও আক্রমণাত্মক খেলার মনোভাব নিয়ে খেলেছে। তাঁর ঠাণ্ডা মেজাজ, দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা এবং খেলার প্রতি নিবেদন তাঁকে একজন অসাধারণ অধিনায়ক এবং ক্রিকেটার করে তুলেছে। ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর ধোনি বিভিন্ন বাণিজ্যিক কার্যক্রম এবং সমাজসেবামূলক প্রকল্পে যুক্ত রয়েছেন। তাঁর অবদান এবং খেলার প্রতি ভালোবাসা ভারতীয় ক্রিকেটে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। মহেন্দ্র সিং ধোনি একজন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা, যিনি তাঁর নেতৃত্ব, দক্ষতা এবং অসাধারণ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে বিশ্ব ক্রিকেটে একটি বিশেষ স্থান অর্জন করেছেন। ভারতের সেরা ১০ জন ক্রিকেটারদের তালিকার মধ্যে ‘’মহেন্দ্র সিং ধোনি’’ হয়েছেন চতুর্থ স্থানে। 

5. বিরাট কোহলি

বিরাট কোহলি হলেন আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান এবং ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। ১৯৮৮ সালের ৫ নভেম্বর দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করা কোহলি তাঁর আগ্রাসী ব্যাটিং, দৃঢ় মানসিকতা এবং অসাধারণ নেতৃত্বের জন্য বিখ্যাত। বিরাট কোহলি তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচে। তিনি দ্রুতই নিজেকে দলের অপরিহার্য সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর দুর্দান্ত ব্যাটিং দক্ষতা এবং ধারাবাহিক পারফরম্যান্স তাঁকে বিশ্ব ক্রিকেটের শীর্ষ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে স্থান দিয়েছে।

কোহলির ক্যারিয়ারের কিছু উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান:

• টেস্ট ক্রিকেটে ১০৮ ম্যাচে ৮,৪১৬ রান (২৮টি শতক)

• ওডিআই ক্রিকেটে ২৭৫ ম্যাচে ১২,৮৯৮ রান (৪৬টি শতক)

• টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১১৫ ম্যাচে ৪,০০৮ রান (১টি শতক)

তাঁর উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের মধ্যে রয়েছে:

• দ্রুততম ৮,০০০, ৯,০০০, ১০,০০০, ১১,০০০, ১২,০০০ ওডিআই রান সংগ্রাহক। 

• একমাত্র ব্যাটসম্যান যিনি এক ক্যালেন্ডার বছরে (২০১৮) তিনটি ফরম্যাটেই ২,০০০+ রান সংগ্রহ করেছেন। 

• আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের অধিনায়ক এবং শীর্ষস্থানীয় রান সংগ্রাহক। 

বিরাট কোহলি বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

• রাজীব গান্ধী খেল রত্ন (২০১৮)

• পদ্মশ্রী (২০১৭)

• অর্জুন পুরস্কার (২০১৩)

• উইজডেন লিডিং ক্রিকেটার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড (২০১৬, ২০১৭

সুন্দর সুন্দর ভুতের গল্প পড়ুন

কোহলি একজন নির্ভীক এবং আক্রমণাত্মক অধিনায়ক হিসেবে পরিচিত, যিনি তাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় দলকে টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে নিয়ে গেছেন এবং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ জয় করেছেন। তাঁর ফিটনেস সচেতনতা এবং খেলার প্রতি গভীর নিষ্ঠা তাঁকে তরুণ প্রজন্মের কাছে একটি আদর্শ মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিরাট কোহলির অবদান এবং খেলার প্রতি নিবেদন ভারতীয় ক্রিকেটে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্স এবং নেতৃত্ব বিশ্ব ক্রিকেটে তাঁর স্থান নিশ্চিত করেছে, এবং তিনি আগামী বছরগুলিতে আরও অনেক কীর্তি অর্জন করবেন। ভারতের সেরা ১০ জন ক্রিকেটারদের তালিকার মধ্যে ‘’বিরাট কোহলি’’ পঞ্চম স্থানে। 

6.  রাহুল দ্রাবিড়

রাহুল দ্রাবিড়, যিনি "দ্য ওয়াল" নামে পরিচিত, রাহুল দ্রাবিড় হলেন ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান এবং একজন নির্ভরযোগ্য ও স্থিতিশীল খেলোয়াড়। ১৯৭৩ সালের ১১ জানুয়ারি মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে জন্মগ্রহণ করা দ্রাবিড় তাঁর টেকনিক্যাল ব্যাটিং, কঠোর পরিশ্রম এবং খেলার প্রতি নিষ্ঠার জন্য পরিচিত। দ্রাবিড় ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে তাঁর টেস্ট অভিষেক করেন এবং প্রথম ম্যাচেই ৯৫ রান করেন। তাঁর ধৈর্যশীল ব্যাটিং শৈলী এবং অসাধারণ প্রতিরোধ ক্ষমতা তাঁকে দ্রুতই দলের অপরিহার্য সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

রাহুল দ্রাবিড়ের ক্যারিয়ারের কিছু উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান:

• টেস্ট ক্রিকেটে ১৬৪ ম্যাচে ১৩,২৮৮ রান (৩৬টি শতক)

• ওডিআই ক্রিকেটে ৩৪৪ ম্যাচে ১০,৮৮৯ রান (১২টি শতক)

তাঁর উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের মধ্যে রয়েছে:

• টেস্ট ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বল খেলা ব্যাটসম্যান।

• টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিক সময় ক্রিজে কাটানো ব্যাটসম্যান। 

• প্রথম ব্যাটসম্যান যিনি টেস্ট ক্রিকেটে সমস্ত টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন।

দ্রাবিড় বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

• পদ্মশ্রী (২০০৪)

• পদ্মভূষণ (২০১৩)

• অর্জুন পুরস্কার (১৯৯৮)

• আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেম (২০১৮)

ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর দ্রাবিড় কোচিংয়ে যোগ দেন এবং বর্তমানে তিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলের জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির (এনসিএ) প্রধান এবং অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দল ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ জয় করে। রাহুল দ্রাবিড় শুধুমাত্র একজন মহান ক্রিকেটার নন, তিনি একজন অনুপ্রেরণা এবং তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য একটি মডেল। তাঁর খেলার প্রতি নিষ্ঠা, সততা এবং কঠোর পরিশ্রম তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি বিশেষ স্থান দিয়েছে। রাহুল দ্রাবিড়ের অবদান এবং খেলার প্রতি ভালোবাসা ভারতীয় ক্রিকেটে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিং এবং নেতৃত্ব ভারতীয় ক্রিকেটকে আরও উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ভারতের সেরা ১০ জন ক্রিকেটারদের তালিকার মধ্যে ‘’রাহুল দ্রাবিড়’’ রয়েছেন ষষ্ঠ স্থানে। 

7. সৌরভ গাঙ্গুলী

সৌরভ গাঙ্গুলী, যিনি "প্রিন্স অব ক্যালকাটা" এবং "দাদা" নামে পরিচিত, হলেন ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সফল অধিনায়ক এবং প্রভাবশালী ব্যাটসম্যান। ১৯৭২ সালের ৮ জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করা গাঙ্গুলী তাঁর আক্রমণাত্মক ব্যাটিং, নেতৃত্বগুণ এবং খেলার প্রতি অনুরাগের জন্য সুপরিচিত। সৌরভ গাঙ্গুলী তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেন ১৯৯২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচে। তবে ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে লর্ডসে শতরান করে তিনি বিশ্ব ক্রিকেটে নিজের নাম প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি তাঁর ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই একজন দক্ষ ওপেনার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।

গাঙ্গুলীর ক্যারিয়ারের কিছু উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান:

• টেস্ট ক্রিকেটে ১১৩ ম্যাচে ৭,২১২ রান (১৬টি শতক)

• ওডিআই ক্রিকেটে ৩১১ ম্যাচে ১১,৩৬৩ রান (২২টি শতক)

তাঁর উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের মধ্যে রয়েছে:

• ২০০২ সালে ইংল্যান্ডে ন্যাটওয়েস্ট সিরিজ জয়

• ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের নেতৃত্ব

• ২১টি টেস্ট ম্যাচে অধিনায়ক হিসেবে জয়

সৌরভ গাঙ্গুলী বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

• পদ্মশ্রী (২০০৪)

• অর্জুন পুরস্কার (১৯৯৭)

অধিনায়ক হিসেবে গাঙ্গুলী ভারতীয় দলকে একটি নতুন দিগন্তে পৌঁছে দেন। তাঁর সময়ে ভারতীয় দল বিদেশের মাটিতে সাফল্য অর্জন করতে শুরু করে এবং তাঁর নেতৃত্বে দলটি আক্রমণাত্মক এবং আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। গাঙ্গুলীর অধিনায়কত্বের সময় ভারতীয় দল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে সাফল্য অর্জন করে। ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর সৌরভ গাঙ্গুলী প্রশাসনিক ভূমিকায় যোগ দেন এবং ২০১৯ সালে বিসিসিআই (ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড) এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা ভারতীয় ক্রিকেটের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সৌরভ গাঙ্গুলী একজন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা, যিনি তাঁর নেতৃত্ব, ব্যাটিং দক্ষতা এবং খেলার প্রতি নিষ্ঠার মাধ্যমে ভারতীয় ক্রিকেটে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করেছেন। তাঁর অবদান এবং খেলার প্রতি ভালোবাসা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ভারতের সেরা ১০ জন ক্রিকেটারদের তালিকার মধ্যে ‘’সৌরভ গাঙ্গুলী’’ রয়েছেন সপ্তম স্থানে। 

8. বীরেন্দ্র সেহওয়াগ

বীরেন্দ্র সেহওয়াগ, যিনি "মুলতান কা সুলতান" এবং "বীরু" নামে পরিচিত, হলেন ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম আক্রমণাত্মক ও বিনোদনমূলক ব্যাটসম্যান। ১৯৭৮ সালের ২০ অক্টোবর দিল্লির নাজাফগড়ে জন্মগ্রহণ করা সেহওয়াগ তাঁর আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শৈলী এবং দ্রুত রান সংগ্রহের ক্ষমতার জন্য সুপরিচিত।

সেহওয়াগ ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচে অভিষেক করেন এবং ২০০১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক করেন। তাঁর ব্যাটিং শৈলী খুবই আক্রমণাত্মক, যা তাকে দ্রুত জনপ্রিয় করে তোলে। তিনি ওপেনিং ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলে দ্রুত রান সংগ্রহের জন্য পরিচিত ছিলেন।

বীরেন্দ্র সেহওয়াগের ক্যারিয়ারের কিছু উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান:

• টেস্ট ক্রিকেটে ১০৪ ম্যাচে ৮,৫৮৪ রান (২৩টি শতক), 

যার মধ্যে দুটি ট্রিপল সেঞ্চুরি রয়েছে।

• ওডিআই ক্রিকেটে ২৫১ ম্যাচে ৮,২৭৩ রান (১৫টি শতক)

• টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৯ ম্যাচে ৩৯৪ রান

তাঁর উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের মধ্যে রয়েছে:

• টেস্ট ক্রিকেটে ৩০০ রানের গন্ডি দু'বার অতিক্রম করা (একটি ৩০৯ রান পাকিস্তানের বিপক্ষে এবং আরেকটি ৩১৯ রান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে)

• ওডিআইতে দ্রুততম দ্বিশতক (২১৯ রান, যা পরে ভেঙে যায়)

বীরেন্দ্র সেহওয়াগ বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

• অর্জুন পুরস্কার (২০০২)

• পদ্মশ্রী (২০১০)

• উইজডেন লিডিং ক্রিকেটার ইন দ্য ওয়ার্ল্ড (২০০৮, ২০০৯)

সেহওয়াগের ব্যাটিং শৈলী তাকে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয় করেছে। তাঁর খেলার সময় দর্শকরা সবসময় উচ্ছ্বসিত থাকতেন এবং তাঁর প্রতিটি ইনিংস একটি উৎসবের মতো মনে হতো। তাঁর আক্রমণাত্মক খেলা ভারতীয় দলের জন্য অনেক ম্যাচে জয়ের রাস্তা তৈরি করেছে। ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর বীরেন্দ্র সেহওয়াগ ধারাভাষ্যকার ও কোচ হিসেবে কাজ করছেন এবং বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছেন। তাঁর সহজাত ব্যাটিং শৈলী এবং খেলার প্রতি অনুরাগ তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি বিশেষ স্থান দিয়েছে। বীরেন্দ্র সেহওয়াগ একজন অনুপ্রেরণা, যিনি তাঁর ব্যাটিং দক্ষতা এবং আক্রমণাত্মক শৈলীর মাধ্যমে বিশ্ব ক্রিকেটে একটি অনন্য স্থান অধিকার করেছেন। তাঁর অবদান এবং খেলার প্রতি ভালোবাসা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ভারতের সেরা ১০ জন ক্রিকেটারদের তালিকার মধ্যে ‘’বীরেন্দ্র সেহওয়াগ’’ রয়েছেন অষ্টম স্থানে।  

9. অনিল কুম্বলে

অনিল কুম্বলে, যিনি "জাম্বো" নামে পরিচিত, হলেন ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা লেগ-স্পিনার এবং ইতিহাসের অন্যতম সফল বোলার। ১৯৭০ সালের ১৭ অক্টোবর কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে জন্মগ্রহণ করা কুম্বলে তাঁর নির্ভরযোগ্য বোলিং, অসাধারণ স্পিন এবং খেলার প্রতি নিষ্ঠার জন্য বিখ্যাত। কুম্বলে ১৯৯০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক করেন এবং দ্রুতই ভারতীয় দলের অপরিহার্য সদস্য হয়ে ওঠেন। তাঁর বোলিং শৈলী অন্যান্য লেগ-স্পিনারদের থেকে ভিন্ন, কারণ তিনি মূলত ভেলোসিটির ওপর নির্ভর করে বল করেন এবং তাঁর বোলিংয়ে বিভিন্ন বৈচিত্র্য প্রয়োগ করেন।

অনিল কুম্বলের ক্যারিয়ারের কিছু উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান:

• টেস্ট ক্রিকেটে ১৩২ ম্যাচে ৬১৯ উইকেট (একটি ১০ উইকেট ইনিংসসহ)

• ওডিআই ক্রিকেটে ২৭১ ম্যাচে ৩৩৭ উইকেট

তাঁর উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের মধ্যে রয়েছে:

• ১৯৯৯ সালে দিল্লিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এক ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়া, যা টেস্ট ক্রিকেটে দ্বিতীয়বার ঘটেছিল (জিম লেকারের পর)

• টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিক উইকেট শিকারী ভারতীয় বোলার

অনিল কুম্বলে বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

• অর্জুন পুরস্কার (১৯৯৫)

• পদ্মশ্রী (২০০৫)

• পদ্মভূষণ (২০২২)

ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর অনিল কুম্বলে কোচিংয়ে যোগ দেন এবং ভারতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর কোচিংয়ে দলটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিরিজে সাফল্য অর্জন করেছে। কুম্বলে আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব দলের কোচ এবং মেন্টর হিসেবেও কাজ করেছেন। অনিল কুম্বলে একজন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা, যিনি তাঁর বোলিং দক্ষতা, কঠোর পরিশ্রম এবং খেলার প্রতি নিষ্ঠার মাধ্যমে ভারতীয় ক্রিকেটে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করেছেন। তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্স এবং নেতৃত্ব ভারতীয় ক্রিকেটকে আরও উচ্চতায় নিয়ে গেছে। অনিল কুম্বলের অবদান এবং খেলার প্রতি ভালোবাসা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে, এবং তিনি ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বদা সম্মানের সাথে স্মরণীয় থাকবেন। ভারতের সেরা ১০ জন ক্রিকেটারদের তালিকার মধ্যে ‘’অনিল কুম্বলে’’ রয়েছেন নবম তম স্থানে। 

10. যশপ্রীত বুমরাহ

যশপ্রীত বুমরাহ, যিনি "বুমরাহ" নামে পরিচিত, হলেন ভারতীয় ক্রিকেটের একজন প্রতিষ্ঠিত পেস বোলার। তিনি ৩০ মে, ১৯৯৯ সালে অসমের জোরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর ব্যালের স্পিড, বলের রক্ষনাত্মকতা এবং অলরাউন্ড ক্রিকেটার হিসেবে তাঁকে বিশেষভাবে প্রশংসা করা হয়েছে।

বুমরাহ ২০১৬ সালে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম দলে প্রবেশ করেন এবং দ্রুতই তাঁর অসাধারণ প্রদর্শনের মাধ্যমে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেন। তাঁর প্রথম ক্রিকেট ইনিংসে তাঁর স্থানীয় অসম সংস্কৃতি থেকে বিশ্ব ক্রিকেটের মহান অবদান পেতে প্রতিশ্রুতি দেয়।

বুমরাহের ক্যারিয়ারের কিছু উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান:

• টেস্ট ক্রিকেটে ২১ ম্যাচে ১২০ উইকেট

• ওডিআই ক্রিকেটে ৮৪ ম্যাচে ১৬৪ উইকেট

তাঁর উল্লেখযোগ্য কৃতিত্বের মধ্যে রয়েছে:

• ভারতীয় ক্রিকেট দলের একটি প্রধান পেস বোলার হিসেবে প্রশংসা

• ক্রিকেট বিশ্বকাপে অগ্রিম পেস বোলার হিসেবে সেরা খেলোয়াড়ের মধ্যে একটি