হরলিক্স এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

হরলিক্স এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন  

হরলিক্স একটি পুষ্টিকর পানীয় যা সাধারণত দুধের সাথে মিশিয়ে পান করা হয়। এটি প্রধানত শিশু, কিশোর এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করার জন্য তৈরি করা হয়। হরলিক্সের প্রধান উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে গমের মল্ট, জইয়ের মল্ট, দুধের কঠিন অংশ, চিনি, এবং বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেল দিয়ে তৈরি হরলিক্স।

হরলিক্স এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

হরলিক্স এর প্রচলন কবে থেকে ? 

হরলিক্সের প্রচলন শুরু হয়েছিল ১৮৭৩ সালে। এটি প্রথমে যুক্তরাজ্যে ড. জেমস এবং উইলিয়াম হরলিক্স দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। মূলত, হরলিক্সকে একটি পুষ্টিকর খাবার হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল যা সহজে হজমযোগ্য এবং বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ, এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য উপযোগী। সেরা ১০ জন সাউথ ইন্ডিয়ান নায়িকাদের নামের তালিকা

প্রথম দিকে, এটি একটি শুষ্ক পাউডার হিসাবে বিক্রি করা হতো যা পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেত। তবে, সময়ের সাথে সাথে এর ফর্মুলা এবং প্যাকেজিংয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং এটি বিভিন্ন স্বাদ ও প্রকারে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। হরলিক্স এখন শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য নয়, বরং সারা বিশ্বে জনপ্রিয় একটি পুষ্টিকর পানীয় হিসাবে পরিচিত।

হরলিক্স এর উপকারিতা 

হরলিক্স একটি জনপ্রিয় পুষ্টিকর পানীয় যা স্বাস্থ্য এবং পুষ্টির জন্য বিভিন্ন উপকারিতা প্রদান করে। হরলিক্সের প্রধান উপকারিতা গুলো হল

হরলিক্সে বিদ্যমান কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিন শরীরের জন্য অতিরিক্ত শক্তি প্রদান করে, যা দৈনন্দিন কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয়। হরলিক্সে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি থাকে, যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং হাড় মজবুত করে। এতে বিদ্যমান ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং মানসিক বিকাশে সহায়ক। হরলিক্সে থাকা ভিটামিন সি এবং আয়রন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।

যারা প্রতিদিনের খাবার থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টি পান না, তাদের জন্য হরলিক্স একটি ভালো পুষ্টির উৎস। হরলিক্সে বিদ্যমান ফাইবার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। এতে বিদ্যমান প্রোটিন মাসল গঠনে সহায়ক এবং শরীরের পেশি মজবুত করতে সাহায্য করে। হরলিক্সে থাকা পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে, যা স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। 

এইসব উপকারিতার জন্য হরলিক্স একটি জনপ্রিয় পুষ্টিকর পানীয় হিসাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তবে, এটি গ্রহণের আগে বিশেষ করে যদি আপনার কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

রমজান মাসের ফজিলত ও গুরুত্ব

হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম 

সাধারণত ২-৩ চামচ হরলিক্স ১ কাপ গরম বা ঠান্ডা দুধে মিশিয়ে পান করা হয়। বিভিন্ন স্বাদে পাওয়া যায় যেমন চকলেট, ভ্যানিলা, মল্ট ইত্যাদি।

বাজারে বিভিন্ন ধরনের হরলিক্স পাওয়া যায়, যা বিভিন্ন বয়সের এবং পুষ্টির প্রয়োজন অনুযায়ী তৈরি করা হয়ে থাকে। কিছু জনপ্রিয় হরলিক্সের ধরন নিচে দেয়া হল 

ক্লাসিক হরলিক্স:- এটি সব বয়সের জন্য উপযুক্ত এবং সাধারণত দুধের সাথে মিশিয়ে পান করা হয়। এতে গমের মল্ট, জইয়ের মল্ট, দুধের কঠিন অংশ, চিনি, এবং বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। 

উইমেনস হরলিক্স (Women's Horlicks):- এটি বিশেষভাবে মহিলাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য তৈরি। এতে আয়রন, ক্যালসিয়াম, এবং ভিটামিন ডি বেশি পরিমাণে থাকে, যা মহিলাদের হাড় এবং রক্তের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

জুনিয়র হরলিক্স (Junior Horlicks):- এটি শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে এবং তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়ক। এতে শিশুদের পুষ্টির চাহিদা অনুযায়ী ভিটামিন, মিনারেল, এবং প্রোটিন থাকে।

জুনিয়র হরলিক্স কত বয়স পর্যন্ত খাওয়া যাবে?

জুনিয়র হরলিক্স সাধারণত ২ থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্য সুপারিশ করা হয়। তবে, সঠিক বয়সসীমা এবং ব্যবহার নির্দেশনা নিশ্চিত করতে প্যাকেটের উপর দেয়া নির্দেশিকা বা পেডিয়াট্রিশিয়ানের পরামর্শ মেনে চলা উচিত।

মাদার'স হরলিক্স (Mother's Horlicks):- এটি গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য তৈরি। এতে অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদান যেমন ফোলিক অ্যাসিড, আয়রন, এবং ক্যালসিয়াম থাকে, যা মায়ের এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

মাদার হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম 

সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন ২-৩ চামচ (২৫-৩০ গ্রাম) মাদার হরলিক্স ২০০ মি.লি. (প্রায় এক গ্লাস) দুধের সাথে মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। মাদার হরলিক্স যে কোনো সময় খাওয়া যেতে পারে, তবে সাধারণত সকালে নাস্তার সময় বা রাতে ঘুমানোর আগে খাওয়া ভালো। এতে সারাদিনের শক্তি ও পুষ্টি প্রয়োজন মেটানো সহজ হয়।


হরলিক্স প্রোটিন+ (Horlicks Protein+):- এটি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যারা তাদের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে চান। এতে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন থাকে যা পেশি গঠনে সহায়ক।

হরলিক্স লাইট (Horlicks Lite):- এটি কম ক্যালোরি এবং কম চিনি যুক্ত একটি বিকল্প, যা স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তিদের জন্য উপযুক্ত।

হরলিক্স চকলেট (Horlicks Chocolate):- এটি চকলেটের স্বাদে পাওয়া যায় এবং যারা চকলেট স্বাদ পছন্দ করেন তাদের জন্য আদর্শ।

হরলিক্স এলএলপি (Horlicks Lite for Little People):- এটি ছোট বাচ্চাদের জন্য একটি বিশেষ সংস্করণ যা তাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।

এই সব হরলিক্সের প্রকারগুলো বিভিন্ন পুষ্টির প্রয়োজন অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে এবং এগুলো বিভিন্ন স্বাদে এবং আকারে পাওয়া যায়। হরলিক্সের বিভিন্ন প্রকারের মধ্যে থেকে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিকটি বেছে নিতে পারেন।

বড়দের হরলিক্স খাওয়ার নিয়ম

হরলিক্স কখন খেতে হয়?

হরলিক্স যে কোনো সময় খাওয়া যায়, তবে সাধারণত এটি খাওয়া হয় সকালে নাস্তার সাথে বা রাতে ঘুমানোর আগে। সকালে খেলে এটি দিন শুরু করার জন্য শক্তি দেয় এবং রাতে খেলে এটি ভালো ঘুমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও, হরলিক্স দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে এর পুষ্টিগুণ বাড়ে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url