বিখ্যাত লেখকদের ভূতের গল্প,
বিখ্যাত লেখকদের ভূতের গল্প
ছোট্ট থেকেই স্বপ্ন ছিল তার, বড় হয়ে হবে এক কম্পিউটার কনসালট্যান্ট। তাই ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি আর ম্যাথামেটিক্স নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর ভর্তি হলো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে, তিন বছরের কম্পিউটার অ্যাপলিকেশন কোর্সে। ভালো ভাবেই পাশ করলো সে, তখন থেকে কম্পিউটার হলো তার সারা দিনের স্বপ্ন ও সাধনা। বাবা রুদ্রপ্রতাপ, সরকারী চাকুরে, একমাত্র ছেলের এই উৎসাহকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিনে দিয়েছিলেন কম্পিউটার। অসংখ্য ফ্লপি। তিনতলার একটি ঘর এয়ার কন্ডিশনড করে দিয়েছিলেন। সেখানেই সকাল থেকে সন্ধ্যে অব্দি কাটায় অর্ঘ্য, বন্ধুদের সাথে খুব একটা মেলামেশা নেই তার। টিভির সিরিয়াল অথবা মেলা-কোন কিছুই তাকে বিন্দুমাত্র আকর্ষণ করতে পারে না।
বরং বলা যেতে পারে, কম্পিউটারের পর্দায় এক একটি ছবি দেখতেই বেশী ভালোবাসে সে। গ্রাফিক ডিজাইন অথবা অ্যানিমেশান-সবেতেই তার সমান উৎসাহ।
বছর তিনেকের মধ্যেই দেখা গেল, দক্ষিণ শহরতলীর এই অঞ্চলে বিজয়গড়ে, কম্পিউটার কনসালট্যান্ট হিসাবে বেশ নাম করেছে অর্ঘ্য। পাড়ার মানুষজন, ছোট
খাটো মেনটেনেনসের জন্যে তারই দ্বারস্থ হচ্ছে। এমন কি ডালহাউসি পাড়ার একটি কোম্পানীতে মাসিক দেখা শোনার কাজ জোগাড় করেছে সে।
এই অব্দি গল্পটাতে কোন অঘটন নেই। নেই কালো রঙের ঘনঘটা, শরৎ আকাশে ভেসে যাওয়া খুশীর মেঘের মত দিন কাটছে। চারপাশে ছিল আনন্দ। পরিষ্কার বাতাসের হাতছানি। তারই মধ্যে কি যেন হয়ে গেল।
ছোট থেকেই ভূতের গল্প পড়তে ভালোবাসতো অর্ঘ্য। যদিও ভূত-প্রেতে বিন্দুমাত্র বিশ্বাস ছিল না তার। কেউ জিজ্ঞেস করলে, বলত অবসরের বিনোদন। কেউ দাবা খেলে। কেউ ফুটবল পেটায়। কেউ ব্যাট হাতে ছক্কা হাঁকে। আর আমি, সময় পেলেই ভূতের গল্পে চোখ রাখি। পেত্নী আর শাঁকচুন্নি, মামদো আর মেছো ভূত, সবাই আমাকে নির্মল আনন্দ দেয়। ব্যাস, এর বেশী কিছু আর জানতে চেও না।
কম্পিউটারের পাশাপাশি ভূত, ব্যাপরটা শুনতে অবাক লাগে বৈকি। তবুও এত দিন পর্যন্ত, দুটির সাথেই বেশ ভালো ভাবে সম্পর্ক পাতিয়ে ছিল অর্ঘ্য। এখনো রাতের বেলা শুতে যাবার আগে ভূতের গল্পের দু-চারটে পাতা না পড়লে ঘুম আসে না তার ক্লান্ত চোখের পাতায়, অথচ এই ভূতের গল্পই তাকে কিনা নতুন একটা ওয়েবসাইট খুলিয়ে ছাড়লো এবং সে তার নাম দিলো, অনেক ভেবেচিন্তে- ভূত ডট কম।
বিখ্যাত লেখকদের ভূতের গল্প পড়ুন এবং আমাদের সাথে থাকুন পরবর্তী পর্বের জন্য
প্রথম প্রথম কিছুই বোঝা যায়নি। সারাদিন কি সব ঠকাস্ ঠকাস্ করে ঐ তিন তলার ঘরটিতে বসে। বাবা রুদ্রপ্রতাপ খুশী হন। মা বিশাখা দেবী ভাবেন, ছেলেটা কি পাগল হয়ে গেল।
তারপর হঠাৎ একদিন ঘটে গেল সেই অঘটন। অর্ঘ্য সেদিনও ব্যস্ত ছিল কম্পিউটার সার্ফিং-এর কাজে। সারা পৃথিবীর জ্ঞান ভাণ্ডারের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে তাকে। প্রতিনিয়ত এখানে সেখানে কত ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। সেগুলোকে দেখতে হবে মনিটরের ওপর। এক-একটি নতুন ক্যাসেট বের করতে হবে। সফটওয়্যার তৈরী করে বাজারে বিক্রী করতে হবে। এমনই তার কত কাজ তার।
নিশুতি রাত। চারপাশ নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। রাতের কলকাতার আর একটা রূপ আছে। দিনের বেলা সেই ছবিটা আমরা স্পষ্ট দেখতে পাই না। তখন মানুষের কোলাহল থাকে। রাত হলে একটি একটি করে আলো নিভে যায়। ক্লান্ত মানুষজন ঘুমিয়ে পড়ে। এক অদ্ভুত ভৌতিক নৈঃশব্দ্য জেগে ওঠে।
তন্ময় হয়ে সার্ফিং করছিল অর্ঘ্য। হঠাৎ কম্পিউটারের মনিটরে একটি আশ্চর্য ছবি দেখতে পেল সে। ঠিক ভূতের গল্পের প্রচ্ছদের মত। লম্বা এক শাকচুন্নি। হাতে ইয়া বড় বড় নখ। চোখ দুটো ঠিকরে বেরিয়ে এসেছে।
ভারী অবাক হলো সে। এমনটি তো হওয়া কোন মতেই সম্ভব নয়। কম্পিউটারের আ আ ক খ সবই যত্নে শিখেছে অর্ঘ্য। সে জানে, মেমারির মধ্যে কোন ঘটনা বা ছবিকে আগে থেকে লোড না করলে তা কখনোই পর্দাতে প্রতিফলিত হতে পারবে না।
চোখে হাত রাখলো। হাই তুললো। জল খেলো। ভাবলো, বোধহয় বেশি কাজ করতে করতে তার মন এমন হয়ে গেছে। উল্টোপাল্টা কি সব দেখছে। বিজ্ঞানীরা একে বলে থাকেন কম্পিউটার ডিজাস্টার। আবার তাকালো।
কি অবাক, ভূতের ছবিগুলো ক্রমশঃ পাল্টে যাচ্ছ। শাঁকচুন্নি এখন আর নেই। সেখানে একটা কঙ্কাল হেঁটে বেড়াচ্ছে।
ক্রমশঃ উত্তেজিত হয়ে ওঠে অর্ঘ্য। পরপর বোতাম টিপতে থাকে। একবার ভাবে, নীচ থেকে মা-বাবাকে ডেকে আনবে। পরক্ষণই মন পাল্টে ফেলে সে। ইদানীং বাবার সাথে সম্পর্কটা মোটেই ভালো যাচ্ছে না অর্ঘ্যের। এই যে অর্ঘ্য সারাদিন কম্পিউটার রুমে বসে থাকে, কারো সাথে কথাবার্তা বলে না, বন্ধুরা এলে দেখা পর্যন্ত করে না, এটা রুদ্রপ্রতাপবাবু মেনে নিতে পারছেন না।
কলকাতার নায়িকাদের নামের তালিকা
কম্পিউটার ঘরে বসে থাকতে থাকতে অর্ঘ্য কি শেষ পর্যন্ত পাগল হয়ে যাবে নাকি-রুদ্রপ্রতাপবাবুর মনে এখন এই আশঙ্কা জেগেছে। মা বিশাখা দেবী তো প্রথম থেকেই ভেবেছিলেন, ছেলে তাঁর সাধারণ হবে।
চাকরি-বাকরি করবে। ছুটির দিনে আনন্দ হৈ হৈ হবে। তার বদলে কিনা......
অতএব, আবার কম্পিউটারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে অর্ঘ্য। রাতের বয়েস এগিয়ে চলে। টিক টিক শব্দে সময় মাপছে দেওয়াল ঘড়ি। নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
একটির পর একটি ছবি আসছে আবার হারিয়ে যাচ্ছে। চলমান মিছিলের মত। অর্ঘ্যের মাথায় রোগ চেপে গেছে। পরপর সার্ফ করতে থাকে সে। কতরকম ভূত আছে পৃথিবীতে? কি তাদের চেহারা? কিন্তুত কিমাকার। মূলোর মত কান। হাতির মত থপথপে। চোখ থেকে আগুন ঠিকরে ঠিকরে পড়ছে।
এই অব্দি ঠিক ছিল। তারপর কিছু ফ্লপি হাতে এসে গেল অর্ঘ্যের। আরো অবাক হল সে। এক-একটি ভূতের ঠিকুজি লেখা আছে। কে কোথায় কিভাবে জন্ম নিয়েছে। ভূতের বাপ-ঠাকুরদা কেমন ভাবে দিন কাটিয়েছে। ভবিষ্যতে কি হতে পারে-এমন সাত সতেরো।
অর্ঘ্যের লোম খাড়া হয়ে গেল। দেখতে দেখতে রাত শেষ হয়ে যায়। ভোরের সূর্য এসে উঁকি দেয় পূর্ব আকাশে।
বিখ্যাত লেখকদের ভূতের গল্প, বই আরও পড়ুন
রুদ্রপ্রতাপবাবু বরাবর সকালে ওঠেন। ঘন্টাখানেক মর্নিং ওয়াক করেন। তিনতলার ঘরে আলো জ্বলছে দেখে অবাক হলেন তিনি। পায়ে পায়ে উঠে এলেন।
ঘরের ভেতর তাকালেন। কি আশ্চর্য, অর্ঘ্য তখনো বসে আছে। সার্ফিং করে চলেছে। ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন রুদ্রপ্রতাপবাবু। তিনি বুঝতে পারলেন, ছেলেকে বুঝি আর ঠিক পথে রাখতে পারলেন না। এইভাবে কম্পিউটার নিয়ে আজব খেলা খেলতে খেলতে মাথাটা সত্যি বিগড়ে গেছে তার।
একবার ভাবলেন, ছেলেকে ডাকবেন। পরক্ষণে ভাবলেন, কি লাভ, এইভাবে আমি আর কতদিন পাহারা দেবো। মাথা নীচু করে তিনি নীচে নেমে এলেন। এখনই বাইরে বেরোবেন। বন্ধু-বান্ধবেরা অপেক্ষা করছেন। যাঁদের সাথে রোজ সকালে দেখা হয় রুদ্রপ্রতাপবাবুর। তাঁদের একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ পাত্র। তাঁরই শরণাপন্ন হবেন কিনা ভাবলেন।
শেষ পর্যন্ত মা বিশাখা দেবীকে উঠে এসে অর্ঘ্যের তন্দ্রা ভাঙাতে হয়েছিল। তন্দ্রা অথবা এই তন্ময়তা-কি নামে ডাকবো তাকে?
ইতিমধ্যেই অনেক খবর সংগ্রহ করেছে অর্ঘ্য। মনটা তার ভরে গেছে। নেহাতই উত্তেজনার খেয়ালে অপারেশন ভূত ডট কমের জন্ম দিয়েছিল। তার প্রকল্পটা যে এতখানি সফল হয়ে উঠতে পারবে কোনদিন, এমন চিন্তাভাবনা করেনি অর্ঘ্য।
মনটা বেশ পরিতৃপ্ত হয়ে গেছে। কখন রাত হবে, কখন আবার একটি একটি করে আলো নিভে যাবে, ক্লান্ত মানুষজন বিছানার আশ্রয়ে ঘুমিয়ে পড়বে। তারই প্রতীক্ষাতে অধীর হয়ে থাকে অর্ঘ্য। কারো সাথে কথা বিশেষ একটা বলে না সে। কোন রকমে দিন শেষে রাতের প্রতিক্ষা করে সে।
বিকেলে সূর্য অস্ত যায়, সেন্ট্রাল পার্ক থেকে দূরন্ত হাওয়া ছুটে আসে। সময়টা সবেমাত্র বসন্ত কাল। এখনো বাতাসে একটু একটু শীত আছে। তবে এসব ভাববার মত সময় নেই অর্ঘ্যের।
অবশেষে রাত নামে। নিশুতি রাত। নৈঃশব্দ্যের চাদর ঢাকা শহর কলকাতা। অর্ঘ্য এসে বসেছে তার নির্দিষ্ট চেয়ারে। সার্ফিং শুরু করেছে উন্মাদের মত। কিন্তু কোথায়? গতকাল যে সমস্ত সুইচ অন করার সাথে সাথে ভূতের ছবি ফুটে উঠেছিল কম্পিউটারের মনিটারে-আজ তারা একেবারে অদৃশ্য হয়ে গেছে। কিছুই বোধগম্য হচ্ছে না অর্ঘ্যের।
চীৎকার করতে থাকে সে। হতাশায় মাথার চুল ছিঁড়তে থাকে। আর তখনই কোথায় যেন একটা শব্দ চিং চিং করে বেজে ওঠে। কে ডাকছে? কেউ কি কাঁদছে? খনখনে গলাতে? খিলখিলে হাসির মত?
অর্ঘ্য বেশ বুঝতে পারে তিনতলার ঐ ঘরে কে যেন ঢুকে পড়েছে ঠাণ্ডা হাওয়া হয়ে। পর্দা নড়ছে। ক্রমশঃ সেই অশরীরী আত্মাটা এগিয়ে আসছে তার দিকে।
অর্ঘ্য স্থির হয়ে বসে থাকে। চোখ দুটি বিস্ফারিত। লোমগুলো খাড়া হয়ে গেছে তার। তার মানে? সে কি এবার সত্যি সত্যি একটি ভূতের সঙ্গে দেখা করতে পারবে? তার সারা জীবনের স্বপ্ন সফল হতে চলেছে।
চোখ বন্ধ করে অর্ঘ্য। মনে পড়ে যায় তার, সেই ছোট্টবেলায় যখন ভূতের গল্পের বই পড়তো, তখন ভাবতো, সত্যি সত্যি কি ভূত আছে এই পৃথিবীতে? নাকি সবই লেখকদের কল্পনা? আরো ভাবতো সে, ভূতের সাথে দেখা কি কোনদিন হবে না তার।
আজ এতো বছর বাদে, তার মনের সেই স্বপ্ন সফল হতে চলেছে।
খনাখনা গলাতে কে যেন বলে ওঠে-অর্ঘ্য, আর তুমি আমাদের দেখা পাবে না।
অর্ঘ্য ভীষণ আহত হয়। শুধায় সে-কেন? আমি কি দোষ করেছি?
দোষের কথা হচ্ছে না অর্ঘ্য, তুমি ভালো করে ভেবে দেখো। তুমি তো মানুষ, তোমার সাথে আমরা কি এভাবে রোজ দেখা করতে পারি?
-তাহলে?
একটা অসম্ভব সম্ভাবনার কথা উকি দেয় মনের মধ্যে-সেটাই বলে বসে ঐ অশরীরী আত্মা। বলতে থাকে খিলখিলে হাসির তালে তালে- তোমাকেও আমাদের
মত ভূত হতে হবে। তবেই তোমার সাথে রোজ দেখা করতে পারবো আমরা।
ভূত? এ কি করে সম্ভব? এই তো আমার রক্ত মাংসের শরীর। আমি পৃথিবীর মানুষ। শুনেছি, মরে গেলে মানুষ ভূত হয়। অপঘাতে মৃত্যু হলে-তার মানে?
ক্রমশঃ হাসিটা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। আর কোন কথা শোনা যায় না। যেমনটি এসেছিল সে তেমনই বেরিয়ে যায়। থেকে যায় তার স্মৃতি আর চিহ্ন অর্ঘ্যের ভয় বিহ্বল মনের ভেতর।
ব্যাপারটা ঘটতেই থাকে। রোজ রাতে। নিয়মমত সে আসে। বেজে ওঠে তার চুড়িতে কিঙ্কিনীর শব্দ। পর্দা দুলে ওঠে। এক দমকা শীতল বাতাস। অর্ঘ্য উৎকীর্ণ হয়ে থাকে তার হাসির শব্দ শুনবে বলে।
কিছুক্ষণ থাকে সে। আকুল আহ্বানে অর্ঘ্যকে ডাক দেয়। যে করেই হোক তাকে ভূতরাজ্যের বাসিন্দা হতেই হবে। তা না হলে আর কখনো কম্পিউটারের পর্দায়
ভূত প্রেতের ছবি সে দেখতে পাবে না।
রুদ্রপ্রতাপ চেষ্টা করেছিলেন ছেলেকে ডাঃ পাত্রের কাছে নিয়ে যেতে। অর্ঘ্য কিছুতেই রাজী হয়নি। নিজের ছেলেকে এতখানি পাল্টে যেতে দেখে অবাক হয়েছে - রুদ্রপ্রতাপ। মা বিশাখা দেবীও হাল ছেড়ে দিয়েছেন। ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করা
ছাড়া আর কিছুই করতে পারছেন না তিনি।
অবশেষে সেই অঘটন। সময়টা বৈশাখ সন্ধ্যা, অমাবস্যার ঘুটঘুট্টি অন্ধকার। কোথাও এতটুকু আলো নেই। গুমোট সকাল থেকে প্রাণ আঁইঢাই। দুপুরের সূর্য চারপাশ জ্বালিয়ে দিয়েছে।
রাতের বেলা অর্ঘ্য এসে বসেছে তার প্রিয় চেয়ারটিতে। সার্ফিং শুরু করবে
কিনা ভাবছে। এখন আর সার্ফ করতে মোটেই ভালো লাগে না তার। ইদানীং
ব্যাবসাপত্রের কাজে আর মন দেয় না অর্ঘ্য। অনেক ক্লায়েন্ট অন্যত্র চলে গেছে।
কম্পিউটারের জগতটাই এইরকম। তোমাকে সবসময় ব্যস্ত থাকতে হবে। কখন
কোন ক্লায়েন্ট কি চাইছে দেখতে হবে। সেইমত লোক পাঠাতে হবে। এখানে
সবাই ছুটছে ছুটন্ত ঘোড়ার সওয়ার হয়ে। এক মুহূর্ত কেউ পিছিয়ে পড়লে আর উঠে
দাঁড়াতে পারবে না।
মনস্থির করে ফেলে অর্ঘ্য। চারপাশ কেমন নিঝুম হয়ে আছে। তাকে অদ্ভুত এক আকর্ষণে ডাকছে ঐ মায়াবিনী। দমকা বাতাস আর খিলখিলে হাসির শব্দ।
অর্ঘ্য উঠে দাঁড়ায়। বাইরে আসে। কার্নিসের কাছে এগিয়ে চলে। পা টিপে টিপে। নীচে এগিয়ে গেছে কংক্রীটের পথ। তারপর, আর কোন কিছু চিন্তা করে না সে। তার চোখের সামনে তখন জ্বলে উঠেছে আলো। দপদপ করে জ্বলছে দুটি চোখ। ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশের দিকে উড়ে যাচ্ছে।
ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে গিয়েছিল রুদ্রপ্রতাপবাবুর। কিছু মানুষের আর্তনাদ। কি হয়েছে? উঠে এসেছিলেন তিনি। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে যে দৃশ্য দেখেছিলেন, হাড়
হিম হয়ে গিয়েছিল তাঁর।
রক্তাক্ত মৃতদেহ। মাথাটা একেবারে থেঁতলে গেছে। অর্ঘ্য। তাঁর আদরের একমাত্র ছেলে। পোস্টমর্টেম হয়েছিল। থানা থেকে পুলিশ এসেছিল। এসব ঘটনাতে যেমন হয়ে থাকে। সবকিছু মিটে যাবার পর শ্মশানে পুড়ে গিয়েছিল অর্ঘ্যের শরীর।
তারপরেই ঘটতে থাকে অঘটন। ছাদের ঐ ঘরটিতে হঠাৎ আলো জ্বলে ওঠে। বেশ বুঝতে পারা যায়, কে যেন টেবিলের ওপর বসে আছে। খটখট শব্দ হচ্ছে। মাউস ঘুরছে। এবং তখনই, মনিটরের পর্দাতে একটির পর একটি ছবি ফুটে ওঠে।
রুদ্রপ্রতাপ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন। তিনি বেশ বুঝতে পারেন তাঁর ছেলে অর্ঘ্য এখন অশরীরী আত্মা হয়ে গেছে। ভূত ডট কম এগিয়ে চলেছে কম্পিউটারের পর্দা ধরে-সারা পৃথিবীর যেখানে যত অশরীরী আত্মা আছে, তাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে বলে। এই ভাবেই ভূত ডট কম চলতে থাকে রুদ্রপ্রতাপবাবুর তিন তলার এ. সি. ঘরে।
গরু মোটাতাজাকরণ দানাদার খাদ্য তালিকা
#বিখ্যাত_লেখকদের_ভূতের_গল্প, #ভূতের_গল্প
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url